মুখবন্ধঃ
আমি কোন সাহিত্য বা ভাষা তত্বের ছাত্র নই এবং বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কেও আমার কোন ধারনা বা জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। লেখালেখি সম্পর্কে কাউকে কোন পরামর্শ দেয়ার যোগ্যতা বা শিক্ষা আমার কিছুই নেই। অতি সাধারণ কিছু ব্যাপার, যা আমার কাছে মনে হয় যারা নবীণ তারা প্রায় ভুল করছেন কাজেই এ নিয়ে দু’চার কথা লিখলে আশা করছি কেউ মনে আঘাত না পেয়ে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন।
আমি কোন সাহিত্য বা ভাষা তত্বের ছাত্র নই এবং বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কেও আমার কোন ধারনা বা জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। লেখালেখি সম্পর্কে কাউকে কোন পরামর্শ দেয়ার যোগ্যতা বা শিক্ষা আমার কিছুই নেই। অতি সাধারণ কিছু ব্যাপার, যা আমার কাছে মনে হয় যারা নবীণ তারা প্রায় ভুল করছেন কাজেই এ নিয়ে দু’চার কথা লিখলে আশা করছি কেউ মনে আঘাত না পেয়ে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন।
ইদানিং অনেককেই দেখছি কবিতা লিখছেন। এটা আনন্দের কথা এবং এজন্য তাদেরকে বিশেষ আন্তরিকতা জানাই এই জন্য যে তারা কিছু করছে সে ভাল বা মন্দ যাই হোক। এক দিনেতে শরৎ বাবু কিংবা হেমন্ত মুখার্জি কিংবা লতা মুঙ্গেশকর কিংবা হুমায়ুন আহমেদ হওয়া যায় না তা সে যতই আদা জল বা ওর স্যালাইন অথবা টেস্টি সেলাইন খেয়ে কিংবা মাজায় গামছা বা বেল্ট বেধে নামুক না কেন। লিখতে লিখতে লেখক, গাইতে গাইতে গায়ক হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রথমত কিছু ভুলভ্রান্তি বা অসঙ্গতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এদের এই সব চেষ্টা দেখে সঙ্গত কারণেই আমার বেশ ভাল লাগে তাই আমার এই সামান্য জ্ঞান দিয়ে যতটা পারি কিছু পরামর্শ দেয়ার জন্য আমার এই পোস্টটি একটু এডিট করে পুনঃপ্রচার করছি। যদিও আমি নিজেই কত ভুল করছি বা করি তার হিসেব না রেখে অপরকে জ্ঞান দান করার মত ঔদ্ধত্য দেখাতে চাইছি, এজন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই পোস্ট যদি কারো কোন কাজে লাগে তবে আমার এই প্রচেষ্টা সফল হবে। কোন ভুল ভ্রান্তি থাকলে আশা করি আমাকে শুধরে দিবেন।
এক সময় ছিল যখন নিজের খাতায় বা ছেড়া কোন কাগজে আমাদের যা কিছু লিখতে ইচ্ছে হত তাই লিখতাম। সে সময় কোন পত্রিকায় লেখা প্রকাশ হওয়া ছিল এক বিশাল রকমের কোন সৌভাগ্যের ব্যপার। সবাই সে সুযোগও পেত না। কিন্তু আজকাল আর সে সময় নেই। যুগের পরিবর্তনে অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনেক কিছুই এসেছে যা খুবই ভাল আবার অনেক কিছু এসেছে যাকে আপাত মন্দ মনে হলেও দেখা যায় তার অধিকাংশই ভাল তাই মন্দ বলার অবকাশ নেই।
ঠিক এমনই কিছু সুযোগ এসেছে এই ওয়েব জগতে। যারা আজকাল এই আকাশ সভ্যতায় বিচরণ করতে পারেন তারা এই সুযোগটা ব্যবহার করতে পারছেন। আবার তেমনি সবাই এখনও এই সুযোগ পাচ্ছেন না। বিশেষ করে এখানে কিছু আর্থিক সঙ্গতির বিষয় জড়িত রয়েছে। এখানে আজকাল সবাই নিজের যা মনে হচ্ছে তা প্রচার বা প্রকাশ করতে পারছেন অতি সহজেই। কেউ নিজের ঘরে বসে, কেউ সাইবার ক্যফে থেকে আবার কেউবা মোবাইল ফোনের সাহায্যে। অনেকেই দেখছেন পড়ছেন। পড়ে তার মতামত দিচ্ছেন। তবে যারা এই জগতে বিচরণ করেন তারা সবাই এক কথায় ধরে নেয়া যায় শিক্ষিত। কাজেই নিতান্ত ভদ্রতা রক্ষা করতে গিয়ে তাদের কেউ হয়ত কাউকে মন্দ বলছে না সবাই এক কথায় প্রসংশা করেই যাচ্ছেন। এতে যিনি লিখছেন তিনি তার নিজেকে সঠিক যাচাই করতে পারছেন না। সে যাই হোক এ সব নিয়ে লিখতে গেলে অনেক কথা এসে যায় তাই কথা বাড়াচ্ছি না। সামান্য কিছু বলেই শেষ করব।
আমি নিজেও বেশ কিছু দিন, তা হ্যাঁ প্রায় বছর তিনেকের কাছাকাছি হবে মনে হয় লিখছি। আমার বাড়ির প্রায় সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে কোন না কোন ব্লগ বা ওয়েব সাইট চালাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা সবাই এই ওয়েব জগতের সাথে জড়িত। বাড়িতে তিনটি ইন্টারনেট কানেকশনের ব্যবস্থা থাকলেও সন্ধ্যার পর কে কার কাজ কখন সেরে নিবে তা নিয়ে হুলস্থুল লেগে যায়। আমার নিজেরই দুইটা ব্লগ রয়েছে যাতে আমি আমার এই লেখাগুলি প্রকাশ করি। আবার আমার মেয়েরা তাদের শিক্ষার বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে, আমার স্ত্রীও বসে নেই। সেও বাংলা ও ইংরেজিতে রান্না বান্না নিয়ে দুইটা ওয়েবসাইট চালাচ্ছে। যদিও সে আমার উপরে মোটা মুটি নির্ভর করেই এগুলি করতে পারছে। এগুলি যে আমরা করছি তা নিতান্ত শখের বশে করছি মনে হয় সে আর বুঝিয়ে বলতে হবে না।
কাউকে শেখাবার জন্য আমার এই লেখা নয়। আমার সাথে সবাই এক মত পোষন নাও করতে পারেন। আমি শুধু আমার ভাবনা গুলি জানাচ্ছি।
এমন নানা ব্লগে লিখতে গিয়ে আমি যে সব সমস্যায় ভুগেছিঃ
১) বাংলায় টাইপ করতে না পারায় অনেক বানান ভুল দেখাত যা নিয়ে অনেক মন্তব্য পেয়েছি এবং নিজের অক্ষমতার জন্য তা মেনেও নিয়েছি। দেখি অনেকেরই এমন হয় তাই আমি অন্তত এ নিয়ে কিছু বলি না। কারন আমি জানি আমরা অধিকাংশই কেউ টাইপিস্ট নই। কলমে বানান ভুল এবং কম্পিউটারের কী বোর্ডে টাইপিং ভুলের মধ্যে অনেক তফাত। বানান নিয়ে এর আগে একটা লেখা দুই পর্বে দিয়েছিলাম হয়ত অনেকেই দেখেছেন আবার নাজমুল হুদা ভাইও একটা পোস্ট দিয়েছেন, এটাও বেশ গুরুত্ব পূর্ণ পোস্ট ছিল। যারা দেখেননি তারা দেখে নিলে উপকৃত হবেন
২) নিজের যা মনে আসত তাই লিখে ফেলতাম। কখনও ভেবে দেখিনি যে কারা এগুলি পড়ছে। ফলে যা হবার তাই হত। নানা কটু মন্তব্য পেয়েছি এবং তা অবলীলায় হজম করেছি। তবুও ওই যে লেখার একটা সখ তা এড়াতে না পেরে লিখে ফেলে একটা আত্ম তৃপ্তি পাবার চেষ্টা করেছি। আমার মত আরো অনেকেই আছেন যারা নিতান্ত শখের বশেই লিখেন।
৩) কবিতা লিখতে গিয়েও ওই একই অবস্থা। পরে কিছু নিজে কিছু ভেবে এবং কিছু খুজে পেয়ে যা জেনেছি তাই আজ এখানে তুলে দিলাম।
আমরা অনেকেই কবিতা নামে কিছু লেখার ইচ্ছা থেকে চেষ্টা করি কিন্তু সে কি হছে তা ভেবে দেখার সুযোগ পাই না বা দেখি না। নিজেই মনে মনে ভেবে নিই যে একটা কবিতা লিখলাম। আসলে কি তাই?
কবিতার কিছু গুন বা নিয়ম অবশ্যই আছে যা আমার ধারনা বা জানা মতে আমি বিশ্বাস করি। জানি না আপনারা আমার সাথে এক মত হবেন কি না।
ক) কবিতা= কথা+বিন্যাস+তান।
খ) মনের কথা মনের মত করে মনের মানুষকে বলার মনের মত উপায়কে কবিতা বলা যায়।
গ) অবসর সময়ের এলো মেলো ভাবনা গুলো কথার বিনুণীতে শৈল্পিক ঢঙ্গে প্রকাশ করাই কবিতা।
ঘ) কবিতা লিখতে গিয়ে কিছু উপাদানের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হয় এগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমনঃ উৎপেক্ষা, উপমা, চিত্রকল্প, অনুপ্রাস, এবং কাব্যময় শব্দ চয়ন। এক শব্দ বা বাক্য একাধিকবার ব্যবহার করা কোন অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য নয়। এমন হতে পারে কেবল গানের সুরের লয় মেলাবার জন্য। অথচ অনেকেই একই কথা বা শব্দের বহু ব্যবহার করে যাচ্ছে।
এগুলির উপযুক্ত ব্যবহার না হলে সমস্ত লেখাটাই একটা হ য ব র ল হয়ে যাবে যা পড়ে মানুষ বিরক্তি বোধ করবে। এতা কিন্তু আমাদের কারো কাম্য নয়, আমরা চাই লিখে কাউকে আনন্দ দিতে, কি বন্ধু গন তাই না?
আবার এর সাথে আরো কিছু দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে যেমন;
শব্দ প্রয়োগে নতুনত্বের প্রচলন, শৈল্পিক ভঙ্গিতে বাক্য গঠন, শৈল্পিক আঙ্গিকে উপস্থাপনা, প্রয়োজনিয় শব্দের অবশ্যম্ভাবী বাণি বিন্যাস, ছন্দ, সার্বজনীন, গতানুগতিকতা বর্জিত, অনুকরণ এবং প্রভাব মুক্ত, সাবলীল প্রকাশ, সুস্পষ্ট বক্তব্য, ভাবের গভীরতা, অহেতুক জটিল শব্দের প্রয়োগ না করা, পড়তে গিয়ে পাঠক হোচট খায় কি না সে দিকে লক্ষ্য রাখা। পাঠক যেন সহজেই পড়ে যেতে পারে সে দিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। এখানে আপনি নিজস্ব ঢং বা স্টাইল তৈরী করে নিতে পারেন তবে তা অবশ্যই সর্বজন নন্দিত হতে হবে। শুধু নিজের কাছে ভাল লাগলেই হবে না। নিচে ছোট্ট একটু উদাহরন দিচ্ছি, যেমনঃ
“বসন্ত বাঁধনে বল্লরী
মাতাল সুরভী ছড়াল মাধুরী”
আবার
“কোয়েলা কোকিলা কাজরী গায় শোনে বনানী
কি মায়া ছড়াল পথের পাশে শিরিশ মেহগিনি!”
এখানে একটু লক্ষ করে দেখুন কেমন লাগছে।
কোন লেখা লিখা শেষ হবার সাথে সাথে পোস্ট করবেন না। কয়েকদিন রেখে দিন। যখন আপনি এই লেখার আবহ বা রেশ সম্পূর্ণ ভুলে যাবেন তখন আবার পড়ে দেখুন কি লিখেছেন। দেখবেন আপনার নিজের কাছেই অনেক ভুল ধরা পরেছে। সম্ভব হলে কাউকে দেখিয়ে বা শুনিয়ে তার মতামত নিয়ে নিন। কোন গান বা কবিতা লিখতে গিয়ে মনের মত শব্দ বা বাক্য না পেয়ে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি, আবার একটা উপন্যাসের শেষ অনুচ্ছেদ কিছুতেই মনের মত হচ্ছিল না বলে ৮ বছর অপেক্ষা করে পেয়েছি আমার এমন দৃষ্টান্তও আছে।
কোন উপযুক্ত শব্দ খুজে পাচ্ছেন না? কয়েকদিন অপেক্ষা করুন দেখবেন সমার্থক সুন্দর ছন্দ ময় শব্দ আপনি যা খুজছেন অবশ্যই পাবেন।
অস্থির হবার কোন দরকার নেই। আস্তে ধীরে লিখুন সুন্দর লিখুন। সবার কলমে থেকে বেরিয়ে আসুক বিখ্যাত কোন কবিতা বা কাব্য বা গল্প বা উপন্যাস, এমন শুভ কামনা সবার জন্য। ভাল থাকুন, ভাল লিখুন এবং সবার মাঝে তা বিলিয়ে দিন।
ব্লগিং হোক জীবনের নিত্য সঙ্গী।
No comments:
Post a Comment
Thank you very much for your comments.