অথচ রাশেদ সাহেব জানেন যখন তিনি জাহাজে চাকরি করতেন তখন প্রতিটি ভয়েজের শেষে যা পেতেন রাশেদ সাহেবের বাবা নির্দ্বিধায় তা একটা খাতায় টুকে রেখে তুলে দিতেন তার এক শ্যালকের হাতে তার ব্যবসার জন্য যা আর কোন দিন ফেরত পান নি। হয় তো তিনি একথা ভুলেই গেছেন। তিনি যদি তখন একটু দূর দৃষ্টি কাজে লাগিয়ে ওই টাকা তার শ্যালক কে না দিয়ে কোথাও কিছু জমি কিনে রাখতেন বা অগত্যা ব্যাঙ্কে জমা রাখতেন তা হলে আজ সে কোথায়
থাকত? রাশেদ সাহেবের অনেক বন্ধুই এরকম করেছে এবং তারা প্রায় প্রত্যেকেই আজ ঢাকা শহরে বাড়ির মালিক। এদিকে রাশেদ সাহেব আজ নিঃস্ব কপর্দক হীন। এর জন্য দায়ী কে? প্রায় বিশ বছর আগের কথা এই সব, সেই সব টাকা আজও ফেরত দেবার প্রয়োজন মনে করেননি বা দেননি, সে টাকা ফেরত পাবার কোন আশাও নেই।
আজ রাশেদ সাহেবের বড়ই দুর্দিন। অসহায়ত্বের চরম সীমায় অবস্থান করছেন, এখান থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় পাচ্ছেন না। কি করে ক্ষতি দিয়ে হলেও এই এতো কষ্ট করে গড়ে তোলা ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যায় এটাই তার এক মাত্র ভাবনা। সে জানে এই অবস্থা চিরদিন থাকবে না এর একদিন পরিবর্তন হবে। কতদিন আর এভাবে একটা দেশ চলতে পারে?সে যে নিজে হাতে গড়ে তুলেছে এই ব্যবসা, এর প্রতিটি ইট কাঠ সব তার নিজের হাতে কেনা। সারা বাজার ঘুরে ঘুরে কোথায় কম দামে কোন জিনিষ পাবেন তাই খুঁজেছেন। সারা দিন রাত ভেবেছেন, হিসেব করেছেন কি ভাবে নির্মান খরচ কমিয়ে আনা যায়। এখানে শেড গুলি তৈরীর সময় দেশে বন্যা হোল সেই বন্যায় চারিদিকে পানি এসে গেল এই পানির মধ্যে দিয়ে জুতা হাতে নিয়ে পরনের প্যান্ট ভিজিয়ে এসে তদারকি করতেন, অথচ সে সাতার জানে না বলে এরকম খোলা পানিতে তার ভীষন ভয়, সে ভয়ও তুচ্ছ করে নিয়েছিলেন। তিনি একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন, কত তারা তারি এবং কম খরচে কাজ শেষ করা যায়। কোন কোন কাজের জন্য কোন ঠিকাদার নিয়োগ না করে সে কাজ সে নিজে করেছে। এটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তার যে কি যন্ত্রণা তা একমাত্র সে নিজেই জানে। এক মাত্র মা ই জানে সন্তান হারাবার যন্ত্রণা কি। যে সৃষ্টি করে সেই বুঝে তার বিনাশের কি জ্বালা, কি যন্ত্রণা, কি ব্যাথা। প্রকৃত মা কোন দিনই তার গর্ভের সন্তানকে কেটে দু ভাগের এক ভাগ নিতে চাইতে পারে না, আমার সন্তান আমাকে ফিরিয়ে না দাও তবুও সে বেচে থাকুক।
বিগত দশ বছর ধরে বিলাতে থাকা মেঝ ভাইয়ের টাকা দিয়ে এই জমি কিনেছিলেন। সেখানেও এক কথা হয়েছিলো। বাবা চেয়েছিলেন তার নামে দলিল করতে কিন্তু রাশেদ সাহেব তা বাধা দিয়েছিলেন। না আব্বা এটা করবেন না। সে জানে বিদেশে থেকে টাকা উপার্জন করা কত কঠিন। নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে, সম্স্ত সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে, দিন রাত অমানুষিক পরিশ্রম করে উপার্জন করতে হয়। কত রাত কেটে যায় ঘুম হীন, কত কি খেতে ইচ্ছে হয়, কত কি অনিচ্ছা সত্বেও পেট ভরার জন্য, বেচে থাকার জন্য খেতে হয়, কত জনের অশ্রাব্য কথা হজম করতে হয়। সেই রোজগারের টাকা কেন তার নামে করবেন না?ওর নামে করুন, এখানে আপনার নামে দলিল করার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। এই জমি কেনার পর থেকেই পরে ছিল, এখান থেকে কোন আয় ছিল না বা আয় করার কোন পথও ছিল না। ওই ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করে ওকে দিয়ে বাবাকে রাজী করিয়ে বাবা এবং ভাই এর দেয়া কিছু আর কিছু টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এটা গড়ে তুলেছিলেন। সে ছিল শুধু পরিচালক, কোন মালিকানা তার নেই।
সব ব্যবসায়ীরা মিলে প্রধান মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাল, ভারতীয় আমদানির বিরুদ্ধে মিছিল করলো, সারা দেশ জুরে চিৎকার করলো মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এর বিহিত করুন, দেশের শিল্প বাচান, দেশের উৎপাদন ব্যবহার করুন, খবরের কাগজে লেখা লেখি হোল কিন্তু প্রধান মন্ত্রীর কানে সে চিৎকার পৌছল না। সে তার গদি বাঁচাবার ধ্যানে পূর্ণ উদ্যমে মশগুল রইলো। ফলে যা হবার তাই হলো।
রাশেদ সাহেব নিশ্চিত ভাবে এগিয়ে চললেন ধ্বংসের দিকে। প্রানান্তকর চেষ্টা করলেন। কর্মচারীরাও বসে থাকেনি তারাও কোথা থেকে ধার কর্জ করে টাকা এনে রাশেদ সাহেবের হাতে তুলে দিয়ে বললো ভাই দেখেন চেষ্টা করেন। ডুবন্ত প্রায় মানুষ যেমন তার কোলের শিশুর উপর দাঁড়িয়ে নাক উচু করে শ্বাস নেয়ার জন্য বেচে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে ঠিক তেমনি মনিরা তার গহনা গুলি এনে দিল। নাও দেখ কদিন চলে। গহনা বলতে আর কি মনিরা যা নিয়ে এসেছিল তাই, সে নিজে কিছু দিতে পারেনি। কিছু অদরকারি জিনিষ পত্র বিক্রি করে কিছু দিন চালালেন এতেও হলো না। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে বেড় হলেন ধার করার জন্য। কিন্তু তাকে কে ধার দিবে? সবার একই কথা তোমার হাতি পোষার খরচ আমরা কি ভাবে জোটাবো?তোমার দরকার অনেক তা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
কতজনের কাছে কাকুতি মিনতি করে বোঝালেন, এরকম থাকবে না অবশ্যই পরিবর্তন হবে। মনে কর তোমরা চালান খাটাচ্ছ। দিনের পরিবর্তন হলেই আমি তোমাদের লাভ সহ ফেরত দিব। কিন্তু এতে কোন লাভ হয়নি। সবাই তাকে দেখলেই ভাবতো এইতো টাকা চাইতে এসেছে। আগেই বলে নিত টাকা চাওয়া ছাড়া আর কোন কাজ থাকলে বল। বিভিন্ন দোকানে বাকীর খাতা বেশ উর্ধ্ব গতিতেই বাড়তে থাকল, দোকানদার রাও আর মাল দিতে চায় না। তাদেরও একই কথা আগের কিছু শোধ করে মাল নিন এভাবে আমি আর কত বাকী দিতে পারি বলুন আমার ক্ষমতাই বা কতটুকু, আমি তো আমার ব্যবসার চালান এক জায়গায় ফেলে রেখে আমার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারি না। রাশেদ সাহেব দেনার দায়ে জর্জরিত, কি করবেন তিনি?রাতে ঘুম নেই। এই দুর্দিনে তার একমাত্র সঙ্গী স্ত্রী মনিরা। দুজনে হাজার পরামর্শ করেও কোন কুল কিনারা পায় নি।
(আবার দেখা হবে যেদিন তারা ভরা রাতে বইবে পৌষের শিশির ভেজা হাওয়া তেমনি কোন সন্ধ্যা আসরে। এ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন এবং পরবর্তী পর্বের অপেক্ষা করুন। ধন্যবাদ)
থাকত? রাশেদ সাহেবের অনেক বন্ধুই এরকম করেছে এবং তারা প্রায় প্রত্যেকেই আজ ঢাকা শহরে বাড়ির মালিক। এদিকে রাশেদ সাহেব আজ নিঃস্ব কপর্দক হীন। এর জন্য দায়ী কে? প্রায় বিশ বছর আগের কথা এই সব, সেই সব টাকা আজও ফেরত দেবার প্রয়োজন মনে করেননি বা দেননি, সে টাকা ফেরত পাবার কোন আশাও নেই।
আজ রাশেদ সাহেবের বড়ই দুর্দিন। অসহায়ত্বের চরম সীমায় অবস্থান করছেন, এখান থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় পাচ্ছেন না। কি করে ক্ষতি দিয়ে হলেও এই এতো কষ্ট করে গড়ে তোলা ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যায় এটাই তার এক মাত্র ভাবনা। সে জানে এই অবস্থা চিরদিন থাকবে না এর একদিন পরিবর্তন হবে। কতদিন আর এভাবে একটা দেশ চলতে পারে?সে যে নিজে হাতে গড়ে তুলেছে এই ব্যবসা, এর প্রতিটি ইট কাঠ সব তার নিজের হাতে কেনা। সারা বাজার ঘুরে ঘুরে কোথায় কম দামে কোন জিনিষ পাবেন তাই খুঁজেছেন। সারা দিন রাত ভেবেছেন, হিসেব করেছেন কি ভাবে নির্মান খরচ কমিয়ে আনা যায়। এখানে শেড গুলি তৈরীর সময় দেশে বন্যা হোল সেই বন্যায় চারিদিকে পানি এসে গেল এই পানির মধ্যে দিয়ে জুতা হাতে নিয়ে পরনের প্যান্ট ভিজিয়ে এসে তদারকি করতেন, অথচ সে সাতার জানে না বলে এরকম খোলা পানিতে তার ভীষন ভয়, সে ভয়ও তুচ্ছ করে নিয়েছিলেন। তিনি একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন, কত তারা তারি এবং কম খরচে কাজ শেষ করা যায়। কোন কোন কাজের জন্য কোন ঠিকাদার নিয়োগ না করে সে কাজ সে নিজে করেছে। এটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তার যে কি যন্ত্রণা তা একমাত্র সে নিজেই জানে। এক মাত্র মা ই জানে সন্তান হারাবার যন্ত্রণা কি। যে সৃষ্টি করে সেই বুঝে তার বিনাশের কি জ্বালা, কি যন্ত্রণা, কি ব্যাথা। প্রকৃত মা কোন দিনই তার গর্ভের সন্তানকে কেটে দু ভাগের এক ভাগ নিতে চাইতে পারে না, আমার সন্তান আমাকে ফিরিয়ে না দাও তবুও সে বেচে থাকুক।
বিগত দশ বছর ধরে বিলাতে থাকা মেঝ ভাইয়ের টাকা দিয়ে এই জমি কিনেছিলেন। সেখানেও এক কথা হয়েছিলো। বাবা চেয়েছিলেন তার নামে দলিল করতে কিন্তু রাশেদ সাহেব তা বাধা দিয়েছিলেন। না আব্বা এটা করবেন না। সে জানে বিদেশে থেকে টাকা উপার্জন করা কত কঠিন। নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে, সম্স্ত সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে, দিন রাত অমানুষিক পরিশ্রম করে উপার্জন করতে হয়। কত রাত কেটে যায় ঘুম হীন, কত কি খেতে ইচ্ছে হয়, কত কি অনিচ্ছা সত্বেও পেট ভরার জন্য, বেচে থাকার জন্য খেতে হয়, কত জনের অশ্রাব্য কথা হজম করতে হয়। সেই রোজগারের টাকা কেন তার নামে করবেন না?ওর নামে করুন, এখানে আপনার নামে দলিল করার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। এই জমি কেনার পর থেকেই পরে ছিল, এখান থেকে কোন আয় ছিল না বা আয় করার কোন পথও ছিল না। ওই ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করে ওকে দিয়ে বাবাকে রাজী করিয়ে বাবা এবং ভাই এর দেয়া কিছু আর কিছু টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এটা গড়ে তুলেছিলেন। সে ছিল শুধু পরিচালক, কোন মালিকানা তার নেই।
সব ব্যবসায়ীরা মিলে প্রধান মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাল, ভারতীয় আমদানির বিরুদ্ধে মিছিল করলো, সারা দেশ জুরে চিৎকার করলো মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এর বিহিত করুন, দেশের শিল্প বাচান, দেশের উৎপাদন ব্যবহার করুন, খবরের কাগজে লেখা লেখি হোল কিন্তু প্রধান মন্ত্রীর কানে সে চিৎকার পৌছল না। সে তার গদি বাঁচাবার ধ্যানে পূর্ণ উদ্যমে মশগুল রইলো। ফলে যা হবার তাই হলো।
রাশেদ সাহেব নিশ্চিত ভাবে এগিয়ে চললেন ধ্বংসের দিকে। প্রানান্তকর চেষ্টা করলেন। কর্মচারীরাও বসে থাকেনি তারাও কোথা থেকে ধার কর্জ করে টাকা এনে রাশেদ সাহেবের হাতে তুলে দিয়ে বললো ভাই দেখেন চেষ্টা করেন। ডুবন্ত প্রায় মানুষ যেমন তার কোলের শিশুর উপর দাঁড়িয়ে নাক উচু করে শ্বাস নেয়ার জন্য বেচে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে ঠিক তেমনি মনিরা তার গহনা গুলি এনে দিল। নাও দেখ কদিন চলে। গহনা বলতে আর কি মনিরা যা নিয়ে এসেছিল তাই, সে নিজে কিছু দিতে পারেনি। কিছু অদরকারি জিনিষ পত্র বিক্রি করে কিছু দিন চালালেন এতেও হলো না। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে বেড় হলেন ধার করার জন্য। কিন্তু তাকে কে ধার দিবে? সবার একই কথা তোমার হাতি পোষার খরচ আমরা কি ভাবে জোটাবো?তোমার দরকার অনেক তা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
কতজনের কাছে কাকুতি মিনতি করে বোঝালেন, এরকম থাকবে না অবশ্যই পরিবর্তন হবে। মনে কর তোমরা চালান খাটাচ্ছ। দিনের পরিবর্তন হলেই আমি তোমাদের লাভ সহ ফেরত দিব। কিন্তু এতে কোন লাভ হয়নি। সবাই তাকে দেখলেই ভাবতো এইতো টাকা চাইতে এসেছে। আগেই বলে নিত টাকা চাওয়া ছাড়া আর কোন কাজ থাকলে বল। বিভিন্ন দোকানে বাকীর খাতা বেশ উর্ধ্ব গতিতেই বাড়তে থাকল, দোকানদার রাও আর মাল দিতে চায় না। তাদেরও একই কথা আগের কিছু শোধ করে মাল নিন এভাবে আমি আর কত বাকী দিতে পারি বলুন আমার ক্ষমতাই বা কতটুকু, আমি তো আমার ব্যবসার চালান এক জায়গায় ফেলে রেখে আমার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারি না। রাশেদ সাহেব দেনার দায়ে জর্জরিত, কি করবেন তিনি?রাতে ঘুম নেই। এই দুর্দিনে তার একমাত্র সঙ্গী স্ত্রী মনিরা। দুজনে হাজার পরামর্শ করেও কোন কুল কিনারা পায় নি।
(আবার দেখা হবে যেদিন তারা ভরা রাতে বইবে পৌষের শিশির ভেজা হাওয়া তেমনি কোন সন্ধ্যা আসরে। এ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন এবং পরবর্তী পর্বের অপেক্ষা করুন। ধন্যবাদ)
No comments:
Post a Comment
Thank you very much for your comments.