[পূর্ব প্রকাশের পর]
হাফিজকে জিজ্ঞেস করলাম তোরা কখন এসেছিস?
প্রায় ঘন্টা খানিক হবে, আপনাকে কয়েক বার ফোন করলাম কিন্তু ‘আউট অফ রিচ’ রিপ্লাই পেয়ে বুঝলাম আপনি হয়ত টিউবে রয়েছেন। আমরা আসার আধা ঘন্টা পরেই ও বের হয়েছে।
তোরা আসবি আমাকে একটু বলবি না?এ খবর জানলাম ঢাকা থেকে। আমি আরো আগে আসতে পারতাম বলে উলটো পথে যাবার কাহিনী বললাম।
এ নিয়ে একটু হাসা হাসি হোল।
হাফিজ বলল গত রাতে ওরা যখন বের হয় তখন আমি ঢাকায় ফোন করে ভাবিকে বলেছিলাম।
বেশ করেছিস, তা ও এসেছে তা জানিয়েছিস?
হ্যা এইতো, আপনি আসার একটু আগে জানিয়েছি।
চল, গাড়ি কোথায়?
পার্কিং এ রেখে এসেছি।
ওরা আগেই সব মালামাল একটা ট্রলিতে উঠিয়ে রেখেছিল। সেটা নিয়ে বাইরে এলাম। হাফিজ আমাদের দাড়াতে বলে গাড়ি আনতে গেল।
হাফিজরা বরাবরই লন্ডনের বাইরে থেকেছে বলে লন্ডনের পথ ঘাট খুব একটা ভাল চিনে না বলে প্রায় দেড় ঘন্টা লেগে গেল স্টেপনি গ্রীনে পৌছাতে। গাড়িতে থাকতেই ফিরোজের স্ত্রী ফোন করে জেনে নিল মেয়ে পৌচেছে কি না। আমি আবার খুকুর মাকে ফোন করলাম, আরিফের বৌকে ফোনে জানালাম।
বাসায় পৌছে হাফিজরা নেমে একটু বসল। এই ফাঁকে খুকু ওর মা ওর সাথে আচার, মোরব্বা বানিয়ে দিয়েছিল ওগুলি বের করে কিছু দিয়ে দিল। বেশি ক্ষন বসল না। আমাদের অনেক দূরে যেতে হবে বলে চলে গেল। যাবার আগে বলে গেল যেন ক্লাশ শুরু হবার আগেই ওদের ওখানে গিয়ে ঘুরে আসে।
ওরা বের হয়ে যাবার পর খুকু বলল আব্বু গোসল করব।
আচ্ছা একটু অপেক্ষা কর দেখি আগে বাড়ির সবার সাথে পরিচয় করে নাও। দেখলাম ওর চেয়ে একটু বড় এক মেয়ে আছে এ বাড়িতে সকালে যখন এসেছিলাম তখন কাজে গিয়েছিল বলে দেখিনি। নাম সুমি, লাল মাটিয়া কলেজ এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে পাশ করে এসেছে আবার ছায়া নট থেকে নজরুল সঙ্গীত শিখেছে। খুকুও লাল মাটিয়া এবং ঢাকা সিটি কলেজের ও ছায়ানটের নজরুল সঙ্গীতের ছাত্রী জেনে বেশ আন্তরিকতার সাথেই গ্রহন করে নিল। আমিও বললাম যাক ভালই হল তুমি এক সাথে মুরুব্বি এবং সাথী দুইই পেলে। সুমি ওকে নিয়ে বাড়ির সব কিছু দেখিয়ে দিল।
গোসল খাওয়া দাওয়া সেরে এসে ঘরটা একটু গুছিয়ে বিছানা পত্র বিছিয়ে বসা মাত্রই আরিফ এলো ওর বউকে নিয়ে। কিছুক্ষণ কথা বার্তা বলে কাল ওদের বাসা চিনিয়ে দেবার কথা বলে চলে গেল। ওরা যাওয়ার পরেই খুকু শুয়ে পরল আমি পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর বাড়ির কথা আলাপ করছি। দেখি ওর কথা জড়িয়ে আসছে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। বুঝলাম জার্ণির ক্লান্তিতে আর পারছে না কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছে আর আমি কথা বলেই যাচ্ছি। হঠাত দেখি ওর কোন জবাব নেই, ওমা ও দেখি ঘুমিয়ে পরেছে। যাক এদিকে রাত হয়ে গেছে আমিও প্রায় সারা রাত জেগে এসেছি বলে শুয়ে পরলাম।
সকালে উঠে হাত মুখ ধুয়ে নাশতা করে এলাম। খুকু তখন অঘোরে ঘুম। ওর ঘুমের ভাব দেখে আর ডাকতে ইচ্ছা হল না, পাশে বসে রইলাম। দশটায় একবার ডাকলাম, না কোন সারা নেই। বারোটা বেজে যায় তখন গভীর ঘুম। না, এখন আর না ডাকলে চলছে না। ডেকে তুললাম। না আব্বু আমি আরো ঘুমাব। ওঠ এখন বেশি ঘুমালে রাতে ঘুম হবে না তখন আরো খারাপ লাগবে বলে টেনে টুনে উঠিয়ে দিলাম। কিছু খেয়ে নাও তারপর চল তোমার আরিফ কাকু আর ফিরোজ কাকুর বাসা চিনে আসি। আমি কিন্তু শুধু আগামী পরশু পর্যন্ত আছি পরশু রাতেই চলে যাব। যা করার এর মধ্যেই সব দেখে চিনে নাও। খুকু চমকে উঠল, কেন আব্বু, তুমি আর কদিন থাকবে না?না বাবা উপায় নেই। আর কদিন থাকলেই বা কি সর্বক্ষণ তো আর থাকতে পারবো না, তোমাকে একাই থাকতে হবে। শুনেই ওর মুখ অন্ধকার কাল হয়ে গেল। প্রবোধ দিলাম, তবুও তোমার ভাগ্য ভাল তোমার বাবা, চাচা চাচী সব আছে তারপর আরিফ, ফিরোজ কাকু এরা আছে আবার এ বাসার সুমিকে পেয়েছ। বাবার সাথে লন্ডনের অনেক কিছু দেখে চিনে নিতে পারছ। কলেজে গেলে হয় তো দেখবে তোমার স্কুল কলেজের কোন বান্ধবীকে ও পেয়ে যেতে পার। অন্য যারা আছে তাদের জিজ্ঞেস করে দেখবে কয় জনকে তাদের বাবা চাচা এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করেছে।দুপুর দুইটার দিকে বের হয়ে বাসার পাশের ওই কুইন্স মেরি ইউনিভার্সিটির পিছনের গেট দিয়ে এসে মাইল এন্ড থেকে ফিরোজের বাসায় এলাম। টিউবে টিকেট করা, টিউব ম্যাপ দেখে জায়গা খুঁজে বের করা, কোন ট্রেন কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে সেটা খুঁজে বের করা সব দেখিয়ে দিলাম। ফিরোজ ওকে আগে ঢাকায় দেখেছে কিন্তু ওর স্ত্রী ওকে আগে দেখেনি। সালাম করল। একটু পরে ফিরোজ এলো।
কি শারমিন লন্ডন কেমন লাগছে?
না চাচা এখনো বুঝতে পারছি না।
বুঝবে কি ভাবে, ও তো কাল সন্ধ্যায় এসে পৌচেছে ততক্ষণ বাবা, চাচা চাচীর সাথে ছিল, তার পর যে ঘুম, এই তোমাদের এখানে আসার আগে ঘুম থেকে টেনে তুলে এনেছি।
ফিরোজের সাথে কথা বলার সময় ভাবী চা নাস্তা নিয়ে এলো। ভাবী রাতে খেয়ে যাবার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করল। বুঝিয়ে বললাম, ভাবী, এসেছে যখন এখন অনেক সময় পাবে, ছোট খাট ছুটি ছাটায় এখানে এসে ২/১ দিন থেকে যাবে তখন অনেক খাবার সময় পাবে। এখানে আপনাদের কাছেই থাকবে, আমি থাকব কত দূরে, কখন কি হয় না হয় আপনারাই দেখবেন। তার চেয়ে এখন আমি যতটা পারি চিনিয়ে দিয়ে যাই। কাল কলেজে নিয়ে যাব। ওদিকে আবার কাল রাতে আরিফরা এসেছিল ওর বৌ বলে গেছে আজ রাতে ওদের ওখানে খেতে। [চলবে]
***তিলে তিলে গড়ে ঊঠা আমাদের এই মহানগরি ঢাকাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা এবং তা রক্ষা করার দায়ীত্ব আমাদের। আমরা যদি এই সায়ীত্ব পালন না করি তাহলে একদিন আমাদের প্রজন্মের কাছে জবাব দিহি করতে হবে।
হাফিজকে জিজ্ঞেস করলাম তোরা কখন এসেছিস?
প্রায় ঘন্টা খানিক হবে, আপনাকে কয়েক বার ফোন করলাম কিন্তু ‘আউট অফ রিচ’ রিপ্লাই পেয়ে বুঝলাম আপনি হয়ত টিউবে রয়েছেন। আমরা আসার আধা ঘন্টা পরেই ও বের হয়েছে।
তোরা আসবি আমাকে একটু বলবি না?এ খবর জানলাম ঢাকা থেকে। আমি আরো আগে আসতে পারতাম বলে উলটো পথে যাবার কাহিনী বললাম।
এ নিয়ে একটু হাসা হাসি হোল।
হাফিজ বলল গত রাতে ওরা যখন বের হয় তখন আমি ঢাকায় ফোন করে ভাবিকে বলেছিলাম।
বেশ করেছিস, তা ও এসেছে তা জানিয়েছিস?
হ্যা এইতো, আপনি আসার একটু আগে জানিয়েছি।
চল, গাড়ি কোথায়?
পার্কিং এ রেখে এসেছি।
ওরা আগেই সব মালামাল একটা ট্রলিতে উঠিয়ে রেখেছিল। সেটা নিয়ে বাইরে এলাম। হাফিজ আমাদের দাড়াতে বলে গাড়ি আনতে গেল।
হাফিজরা বরাবরই লন্ডনের বাইরে থেকেছে বলে লন্ডনের পথ ঘাট খুব একটা ভাল চিনে না বলে প্রায় দেড় ঘন্টা লেগে গেল স্টেপনি গ্রীনে পৌছাতে। গাড়িতে থাকতেই ফিরোজের স্ত্রী ফোন করে জেনে নিল মেয়ে পৌচেছে কি না। আমি আবার খুকুর মাকে ফোন করলাম, আরিফের বৌকে ফোনে জানালাম।
বাসায় পৌছে হাফিজরা নেমে একটু বসল। এই ফাঁকে খুকু ওর মা ওর সাথে আচার, মোরব্বা বানিয়ে দিয়েছিল ওগুলি বের করে কিছু দিয়ে দিল। বেশি ক্ষন বসল না। আমাদের অনেক দূরে যেতে হবে বলে চলে গেল। যাবার আগে বলে গেল যেন ক্লাশ শুরু হবার আগেই ওদের ওখানে গিয়ে ঘুরে আসে।
ওরা বের হয়ে যাবার পর খুকু বলল আব্বু গোসল করব।
আচ্ছা একটু অপেক্ষা কর দেখি আগে বাড়ির সবার সাথে পরিচয় করে নাও। দেখলাম ওর চেয়ে একটু বড় এক মেয়ে আছে এ বাড়িতে সকালে যখন এসেছিলাম তখন কাজে গিয়েছিল বলে দেখিনি। নাম সুমি, লাল মাটিয়া কলেজ এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে পাশ করে এসেছে আবার ছায়া নট থেকে নজরুল সঙ্গীত শিখেছে। খুকুও লাল মাটিয়া এবং ঢাকা সিটি কলেজের ও ছায়ানটের নজরুল সঙ্গীতের ছাত্রী জেনে বেশ আন্তরিকতার সাথেই গ্রহন করে নিল। আমিও বললাম যাক ভালই হল তুমি এক সাথে মুরুব্বি এবং সাথী দুইই পেলে। সুমি ওকে নিয়ে বাড়ির সব কিছু দেখিয়ে দিল।
গোসল খাওয়া দাওয়া সেরে এসে ঘরটা একটু গুছিয়ে বিছানা পত্র বিছিয়ে বসা মাত্রই আরিফ এলো ওর বউকে নিয়ে। কিছুক্ষণ কথা বার্তা বলে কাল ওদের বাসা চিনিয়ে দেবার কথা বলে চলে গেল। ওরা যাওয়ার পরেই খুকু শুয়ে পরল আমি পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর বাড়ির কথা আলাপ করছি। দেখি ওর কথা জড়িয়ে আসছে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। বুঝলাম জার্ণির ক্লান্তিতে আর পারছে না কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছে আর আমি কথা বলেই যাচ্ছি। হঠাত দেখি ওর কোন জবাব নেই, ওমা ও দেখি ঘুমিয়ে পরেছে। যাক এদিকে রাত হয়ে গেছে আমিও প্রায় সারা রাত জেগে এসেছি বলে শুয়ে পরলাম।
সকালে উঠে হাত মুখ ধুয়ে নাশতা করে এলাম। খুকু তখন অঘোরে ঘুম। ওর ঘুমের ভাব দেখে আর ডাকতে ইচ্ছা হল না, পাশে বসে রইলাম। দশটায় একবার ডাকলাম, না কোন সারা নেই। বারোটা বেজে যায় তখন গভীর ঘুম। না, এখন আর না ডাকলে চলছে না। ডেকে তুললাম। না আব্বু আমি আরো ঘুমাব। ওঠ এখন বেশি ঘুমালে রাতে ঘুম হবে না তখন আরো খারাপ লাগবে বলে টেনে টুনে উঠিয়ে দিলাম। কিছু খেয়ে নাও তারপর চল তোমার আরিফ কাকু আর ফিরোজ কাকুর বাসা চিনে আসি। আমি কিন্তু শুধু আগামী পরশু পর্যন্ত আছি পরশু রাতেই চলে যাব। যা করার এর মধ্যেই সব দেখে চিনে নাও। খুকু চমকে উঠল, কেন আব্বু, তুমি আর কদিন থাকবে না?না বাবা উপায় নেই। আর কদিন থাকলেই বা কি সর্বক্ষণ তো আর থাকতে পারবো না, তোমাকে একাই থাকতে হবে। শুনেই ওর মুখ অন্ধকার কাল হয়ে গেল। প্রবোধ দিলাম, তবুও তোমার ভাগ্য ভাল তোমার বাবা, চাচা চাচী সব আছে তারপর আরিফ, ফিরোজ কাকু এরা আছে আবার এ বাসার সুমিকে পেয়েছ। বাবার সাথে লন্ডনের অনেক কিছু দেখে চিনে নিতে পারছ। কলেজে গেলে হয় তো দেখবে তোমার স্কুল কলেজের কোন বান্ধবীকে ও পেয়ে যেতে পার। অন্য যারা আছে তাদের জিজ্ঞেস করে দেখবে কয় জনকে তাদের বাবা চাচা এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করেছে।দুপুর দুইটার দিকে বের হয়ে বাসার পাশের ওই কুইন্স মেরি ইউনিভার্সিটির পিছনের গেট দিয়ে এসে মাইল এন্ড থেকে ফিরোজের বাসায় এলাম। টিউবে টিকেট করা, টিউব ম্যাপ দেখে জায়গা খুঁজে বের করা, কোন ট্রেন কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে সেটা খুঁজে বের করা সব দেখিয়ে দিলাম। ফিরোজ ওকে আগে ঢাকায় দেখেছে কিন্তু ওর স্ত্রী ওকে আগে দেখেনি। সালাম করল। একটু পরে ফিরোজ এলো।
কি শারমিন লন্ডন কেমন লাগছে?
না চাচা এখনো বুঝতে পারছি না।
বুঝবে কি ভাবে, ও তো কাল সন্ধ্যায় এসে পৌচেছে ততক্ষণ বাবা, চাচা চাচীর সাথে ছিল, তার পর যে ঘুম, এই তোমাদের এখানে আসার আগে ঘুম থেকে টেনে তুলে এনেছি।
ফিরোজের সাথে কথা বলার সময় ভাবী চা নাস্তা নিয়ে এলো। ভাবী রাতে খেয়ে যাবার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করল। বুঝিয়ে বললাম, ভাবী, এসেছে যখন এখন অনেক সময় পাবে, ছোট খাট ছুটি ছাটায় এখানে এসে ২/১ দিন থেকে যাবে তখন অনেক খাবার সময় পাবে। এখানে আপনাদের কাছেই থাকবে, আমি থাকব কত দূরে, কখন কি হয় না হয় আপনারাই দেখবেন। তার চেয়ে এখন আমি যতটা পারি চিনিয়ে দিয়ে যাই। কাল কলেজে নিয়ে যাব। ওদিকে আবার কাল রাতে আরিফরা এসেছিল ওর বৌ বলে গেছে আজ রাতে ওদের ওখানে খেতে। [চলবে]
***তিলে তিলে গড়ে ঊঠা আমাদের এই মহানগরি ঢাকাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা এবং তা রক্ষা করার দায়ীত্ব আমাদের। আমরা যদি এই সায়ীত্ব পালন না করি তাহলে একদিন আমাদের প্রজন্মের কাছে জবাব দিহি করতে হবে।
No comments:
Post a Comment
Thank you very much for your comments.