Sunday 9 December 2012

নক্ষত্রের গোধূলি -৫৯ [অধ্যায় ৬]

[পূর্ব সূত্রঃ নক্ষত্রের গোধূলি, পর্ব -৫৮]

নাসির এবং রাশেদ সাহেব জব সেন্টার থেকে বেরিয়ে এল।
আচ্ছা, এখন বল কি দেখলে আর কি বুঝলে?
হ্যাঁ, ওই তো যা বলেছি তাই, আমি আপনার পথেই এগিয়ে দেখি কি হয়।

বেশ তাহলে আজ আমাদের আর কোন কাজ নেই। এখন চল দেখি আমার একটা থাকার জায়গা খুঁজতে হবে। ওটা পেলে তারপর ভিক্টোরিয়া যাব কাল ব্রিজেন্ড যাবার টিকেট করার জন্য।
আপনার থাকার জায়গা নেই?
থাকলে আর খুঁজবো কেন?

আরে না না কিছু খুঁজতে হবেনা! বললাম না আমার ওয়াইফ আজ চলে গেল আমার বাসা খালি ওখানেই থাকবেন। যাবার আগে ও রান্না বান্নাও করে রেখে গেছে। কিচ্ছু করতে হবেনা সব রেডি আছে।
বল কি! এ যে স্বপ্নাতীত ব্যাপার মেঘ না চাইতে জল! আমি যে কিছুই ভাবতে পারছি না!
রাশেদ ভাই, এক কাজ করি চলেন! এখন বাসায় যাই। আপনার ব্যাগটা রেখে খেয়ে দেয়ে দুজনে বেড়াই। আমার ডে টিকেট নেয়া আছে।
আমিও সকালে ডে টিকেট নিয়েছিলাম, কিন্তু যাবো কোথায়? হ্যাঁ চল, ইস্ট একটনে আমার এক বন্ধু আছে তার ওখানে যাই!
চলেন আগে বাসায় যেয়ে খেয়ে বের হই!।
তাহলে এক কাজ করি, আগে ভিক্টোরিয়া থেকে আমার টিকেট নিয়ে আসি।
হ্যাঁ, তা করা যায়।
আলাপ করতে করতে নতুন দুই বন্ধু অল্ড গেট ইস্ট টিউব স্টেশনে নেমে ডিস্ট্রিক্ট লাইন ধরে ভিক্টোরিয়া চলে এল। টিউব থেকে বের হয়ে একটু হেটে কোচ টার্মিনালে এসে রাশেদ সাহেবের ব্রিজেন্ড যাবার টিকেট নিয়ে নাসিরের ফরেস্ট গ্রীনের বাসায় চলে এল। বাসায় এসে নাসির বলল
রাশেদ ভাই আপনি ফ্রিজে দেখেন কি আছে আর কি লাগবে, আমি আবার এসব ব্যাপারে একেবারে আনাড়ি।
আচ্ছা দেখছি, বলে ফ্রীজ খুলে দেখে নাসিরের বৌ চিকেন, সবজি আর ভাত রান্না করে রেখে গেছে। ফ্রীজে টমাটো কাঁচা মরিচ, শশা, পিঁয়াজ, ব্রেড জ্যাম মাখন সবই আছে।

তোমার বৌ দেখছি সবই রেখে গেছে!
হ্যা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে সে জানে তাই দুই চার দিনের মধ্যে যাতে কিছু করতে না হয় সে ব্যাবস্থা করে গেছে।
একটু সালাদ বানাই, কি বল?
হ্যাঁ হ্যাঁ আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন আমাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে কোন লাভ হবে না।
সালাদ বানিয়ে ভাত তরকারি মাইক্রোওয়েভে গরম করে দুজনে খেতে বসলেন। এত আয়োজন সামনে দেখে রাশেদ সাহেবের সকালে রিতা আপার বাড়ির কথা মনে হল। চোখ ছল ছল করে উঠল, মনটা ভারি হয়ে গেল। চুপ চাপ কোন কথা বলছেন না, ভাতও মুখে দিতে পারছেন না। ভাতে হাত দিয়ে বসে রইলেন। নাসির লক্ষ করে জিজ্ঞেস করল
কি ব্যাপার রাশেদ ভাই হঠাত কি হল? এরকম নিরব হয়ে গেলেন! আপনার চোখ ভেজা কেন?
না কিছু না!

না না, কিছুতো অবশ্যই। ভাবির কথা মনে হচ্ছে?
না না, বললাম না তেমন কিছু না।
না রাশেদ ভাই, পথে পরিচয় বলে লুকাতে চাইছেন, এখনও আপন ভাবতে পারছেন না?
না না কি যে বল ভাই, তোমার এই ঋন আমি কি ভাবে শোধ করব জানিনা। তবে এইটুক বুঝতে পারছি যে আল্লাহ তাআলা আমার প্রতি বিশেষ কৃপা করে আজ আমাকে তোমার সাথে দেখা করিয়ে দিয়েছেন।
ভাই একটু খুলে বলেন, আমি কিছু বুঝতে পারছি না। তবে এটুক বুঝছি যে আপনার ভিতরে কঠিন একটা ঝড় বইছে যা আপনি প্রকাশ করতে চাইছেন না। সারাদিন একসাথে রইলাম, এতক্ষণ কি সুন্দর হাশি খুশি ছিলেন আর এখন হঠাত এমন হয়ে গেলেন! দেখুন রাশেদ ভাই আমিও কিন্তু কম দেশ ঘুরিনি! আমার ব্যবসার কারনে বলেন আর যে কারনেই বলেন আমাকে অনেক দেশে ঘুরতে হয়েছে। সে কারন আমি পরে বলব আপনাকে। এরকম অনেকের সাথেই পরিচয় হয়েছে, আলাপ হয়েছে এবং পরবর্তিতে কারো কারো সাথে ঘনিষ্ঠতাও হয়েছে যা এখনো টিকে আছে। কাজেই পথের পরিচয় বলে এড়িয়ে যাবেন না। কি হয়েছে খুলে বলেন।
না নাসির আমি এড়িয়ে যেতে চাইনা, সত্যি করেই কঠিন কিছু তাই আমার ভাষা স্তব্ধ হয়ে গেছে বলার মত ভাষা পাচ্ছি না। তোমার সাথে দেখা না হলে এতক্ষণ আমার যা হত তার পরিবর্তে আমার সামনে এই আয়োজন আমার কাছে অনেক বড় কিছু মনে হচ্ছে। যা আমি কিছুতেই ভাবতে পারছি না।
আচ্ছা যা আছে থাকুক আগে খেয়ে নেন তারপর বলেন।
রাশেদ সাহেব খেতে শুরু করলেন। আস্তে আস্তে বললেন
শুনতে যখন চাইছ তাহলে শোন
ওবান থেকে ফেরার আগে রিতা আপার সাথে ফোনের আলাপ থেকে আজ সকালে রিতা আপার বাসা পর্যন্ত সব কিছু খুলে বলল। তখন ব্রিক লেনে বসে শুধু এই কথাগুলি লুকিয়ে রেখেছিল।

শুনে নাসির বলল
এমন কোন বিপদ নেই যা মানুষের অতিক্রমের বাইরে, যার যার সৃষ্টিকর্তা সেই ভাবেই নেটওয়ার্ক তৈরী করে রেখেছেন। আপনার রিতা আপার মত অনেকেই আছে যারা এই সত্যটা অনুভব করেনা। চলেন রাশেদ ভাই উনার বাসায় যাই। আপনার কথা শুনে উনাকে দেখার একটু লোভ হচ্ছে, দেখে আসি এ কেমন মহিলা।

না, কি হবে দেখে? আমি ভুলে যেতে চাই। সুখের কথা মনে রাখতে হয় আর দুঃখের কথা ভুলে যাবার চেষ্টা করতে হয়। বাদ দাও কি হবে গিয়ে!
না অন্তত এই ব্যাপারটা একটু জানিয়ে আসুন যে আপনাকে তার ওখানে বেশিদিন থাকতে হত না। এইতো আপনি কালই লন্ডন থেকে চলে যাবেন এই ব্যাপারটাই একটু জানিয়ে আসুন। আপনি লন্ডনে থাকতে আসেননি। প্লিজ চলেন রাশেদ ভাই!
আচ্ছা দেখি তাহলে। আমাদের তো আর যাবার জায়গা নেই রিতা আপার বাসা থেকে ফিরোজের বাসায় যাব। তবে নাসির, তোমার ওয়াইফের রান্না কিন্তু চমত্কার। একটা ব্যাপার লক্ষ করেছ? দেখ, যে রেঁধে রেখে গেছে সে এখন ঢাকার পথে আকাশে উড়ে যাচ্ছে আর তার রান্না কে খাচ্ছে! এই হল নিয়তি! কি আশ্চর্য নিয়তির বিধান! রান্নার সময় সে বা কেউ কি ঘুনাক্ষরেও ভেবেছিলে যে এই রান্না আমি খাব?
খাবার শেষ করে রাশেদ সাহেব চা বানালেন। দুইজনে বসে চা খাবার সময় নাসির বলল
বাহ! বেশ ভাল চা বানিয়েছেন! আমিনার চা ভালো হয়না ও নিজে চা খায় না মনে হয় তাই ভালো চা বানাতেও পারে না।
কি বললে আমিনা?
হ্যা আমার ওয়াইফের ডাক নাম আর ভালো নাম ফাহমিদা পারভিন।
তাই নাকি আমিনা তো আমার মায়ের নাম।
টেবিলের ড্রয়ার টেনে নাসিরের ছেলে আর ফাহমিদার ছবি দেখাল। ছেলের ছবি দেখে রাশেদ সাহেব চমকে উঠে নাসিরের দিকে তাকালেন। পোলিওতে আক্রান্ত ছেলে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা।

নাসির লক্ষ করে বলল
হ্যাঁ ভাই। এইটাই আমার একমাত্র দুঃখ, এই আমার ছেলে ফারুখ। এর জন্যেই আমি এতো দেশে ঘুরছি। শুধু ছেলেটার চিকিৎসার জন্য। এখানেও চেষ্টা করেছি। এরা বলেছে চেষ্টা করে দেখতে পারে তবে সময় লাগবে। আমি এখানে এত সময় দেব কিভাবে? ওর নানা নানি থাকে আমেরিকায়। ওদেরকে নিয়ে আমি এত দেশ ঘুরছি শুধু আমাদের পাসপোর্ট ভারি করার জন্য। যখন আমেরিকার ভিসার জন্য এপ্লাই করব তখন যাতে রিফিউজ না হয় এই ধারনা নিয়ে এতো টাকা খরচ করে চলেছি।
কথা বলতে বলতে বেড় হয়ে রিতা আপার বাসায় যাবার টিউব স্টেশনে এসে পরেছে।
প্রায় মিনিট চল্লিশের মধ্যে রিতা আপার বাসায় এসে দরজায় নক করার সাথে সাথেই দরজা খুললেন দুলাভাই। রাশেদ সাহেবকে দেখে একটু হেসে বললেনঃ
কি যেন তোমার নাম, শাহেদ!
না আমি রাশেদ আর আমার সাথে এ আমার বন্ধু নাসির,
ও হ্যাঁ, আমি তোমাদের দুই ভাইয়ের নাম গুলিয়ে ফেলি, আস, কোথা থেকে আসলে?
ড্রইংরুমে বসে আপা উল দিয়ে কি যেন বুনছিলেন। টিভি চলছে পাশে।
কি খবর রাশেদ কাজ পেয়েছ?
হ্যাঁ আপা পেয়েছি।
কোথায়?
সাউথ ওয়েলসে কারডিফ আর সোয়ানসীর মাঝা মাঝি কি যেন জায়গার নাম ভুলে গেলাম, ভাবলাম কাল চলে যাব তাই দেখা করে যাই। আবার কবে আসা হয় ঠিক নেই তাই এলাম।
ভালো করেছ। কখন কোথায় থাক যোগাযোগ রেখ, বস আমি চা নিয়ে আসছি।
শুরু হল দুলাভাইর আলাপ,

নানা প্রসংগে, বিশেষ করে বাংলাদেশের দুর্নীতি, ত্রুটিপুর্ণ চিকিৎসা ব্যাবস্থা, এখানকার ব্যাস্ত জীবনের একঘেয়েমি, অবসরপ্রাপ্তদের অসহায়তা ইত্যাদি, আর শেষ হতে চায়না। এমনিতে দুলাভাই খুবই আলাপি মানুষ। লন্ডন রয়াল হাসপাতালের ডাক্তার ছিলেন কিন্তু এক সরক দুর্ঘটনায় শরীরের বেশ অনেকগুলি হাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় আর ডাক্তারি করতে পারছেন না। লন্ডনের মত জায়গা বলে এখনও বেঁচে আছেন।
রাশেদ সাহেব আপার সকালের ব্যাবহারের কোন কুল কিনারা এখনো খুঁজে পেল না। সকালে যে এসেছিল সে প্রসংগ ঘুনাক্ষরেও তুলেনি। এদিকে রাত হয়ে যাচ্ছে, শীতের রাত। ফিরোজের বাসায় যেতে হবে। রাশেদ বলল
দুলাভাই আজ আমরা উঠি আবার এলে তখন সময় নিয়ে আসব!
না না বস, তুমি এসেছ কবে তা কিন্তু বলনি!
আজই স্কটল্যান্ড থেকে সকালে এসেছি। এসেই ব্রিকলেন গেলাম, সাথে সাথেই একটা কাজ পেলাম। কাল সকালেই চলে যাব।
কথা গুলি একটু জোড়েই বলল, বিশেষ করে রিতা আপা যাতে ভাল করে শুনতে পায়!
আর একটু বস।
না দুলাভাই আমাকে এখন ইস্ট একটন যেতে হবে।
কেন একটন কেন?
ফিরোজের বাসায়, আমি লন্ডন এসেছি আর ফিরোজের সঙ্গে দেখা করব না এটা হতে পারেনা যেতেই হবে দুলাভাই, এখন উঠি।
আপাও সায় দিল হ্যাঁ ওর বন্ধু, কাজেই দেখা করতে যাবে ওকে এখন যেতে দাও।
আচ্ছা তাহলে ফোন করবে আর আবার লন্ডন আসলে আসবে।
হ্যা অবশ্যই আসব।
বাসা ছেরে বাইরে এসে জিজ্ঞেস করল,
কি নাসির রিতা আপাকে দেখলে?

হ্যাঁ, দেখলাম এবং অবাক হলাম এই দেখে যে সকালের ঘটনা সম্পর্কে ওনার কোন বিকার নেই, আর ভালো লাগলো যে আপনিও কিছু তুলেন নি।
তুলে কি লাভ হবে বল, দুলাভাইকে দেখলে, তাকে দেখে তার সাথে কথা বলে কি মনে হয়েছে আপা যা বলেছে তা সত্য? আরো ঘটনা আছে যা তুমি জানো না, সে সব পরে আস্তে আস্তে বলব। এখন যেখানে যাচ্ছি আমার এই বন্ধু কিন্তু রিতা আপার মত না। সে আমার ছোট বেলার বন্ধু এবং এখানে আমার জন্য অনেক করেছে ।
ফিরোজের বাসায় আসতে প্রায় সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেল। পরিচয়ের পালা শেষ হল।
বল কি খবর, আচ্ছা তোমার রিতা আপার সাথে দেখা হয়েছে?
হ্যা হয়েছে।
মহিলা গত কাল ফোন করে আমাকে বলল রাশেদের আগামি কাল এখানে আসার ব্যাপারে কি আপনি জানেন?
হ্যা জানি।
একথা শুনে তোমার দুলাভাইয়ের নানা রকমের সমস্যার কথা বলে ডাক্তারের রেফারেন্স টেনে শেষ পর্যন্ত বলল আমার কাছে ওর ফোন নম্বর নেই কাজেই আমি তোমাকে উনার ওখানে আসতে নিষেধ করতে পারব কিনা জানতে চাইল।
তুমি কি বললে?
আমি কি বলব, বললাম এ কথা আমার বলা ঠিক হবেনা, আমি জানি এটা বেশ কয়েক দিন আগের ঘটনা, ও কাল আসবে আর আজ এই সংবাদ আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। আমার কাছে ফোন নম্বর আছে আপনি নিজেই ফোন করে বলে দেন তাই ভালো হবে বলে আমি ফোন নম্বর দিয়ে দিলাম।
হ্যাঁ আমি যা ভেবেছি তাই। আমি কাল বিকেলে তার ফোনের খবর পেয়ে ফোন করলাম কেউ ফোন ধরে না, তোমাকে ফোন করলাম তুমি বাসায় নেই। গ্লাসগো এসে আবার ফোন করলাম কেউ ধরে না। আমি জানতাম তোমার কাছ থেকেই ফোন নম্বর পেয়েছে। সকালে বাসায় পৌঁছা্র পর তোমাকে যা বলেছে আমাকেও তাই বলেছে। তার এ কথা শুনে আমি আর দেরি করিনি, সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে সোজা ব্রিকলেন চলে গেছি।
তা তুমি হঠাত করে ওখানে যাবার ইচ্ছা করলে কেন, এখানে কি অসুবিধা ছিল?

একথা শুনে রাশেদ সাহেব বিব্রত বোধ করল। সে জানে এই প্রশ্নের সামনে তাকে পরতেই হবে! নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বলল
না, আসলে ব্যাপারটা তাহলে খুলে না বললে বুঝবে না। শোন, তাহলে তোমাদের সাথে স্কুল শেষে ছাড়া ছাড়ি হবার পর থেকেই উনার ভাই এর সাথে কলেজে পরিচয় এবং বন্ধুত্ব এবং পরবর্তীতে কর্ম জীবনেও একই সাথে, সেই সুবাদে ঘনিষ্ঠতা। তুমিতো নিখোঁজ, মানে আমরা কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছি, তার পরে শাহিনের সাথে ওই ঘনিষ্ঠতা এখনো গভীড় ভাবেই আছে। ওসমানের কথা মনে আছে? কোন ওসমান? ওই যে আমাদের সাথেইতো ছিলো মনিরার ভাই। ও হ্যা মনে আছে। আরোও অবাক হবে যে ওসমানের বোন মনিরার সাথে যে আমার বিয়ে সেই ঘটকও ওই শাহিন। কাজেই বুঝতে পারছ এখন, তার বোন তাই। এ ছারা আর কোন অসুবিধা না। ভাবলাম কখনো যাইনি, একবার যাই এইতো!
না রাশেদ আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে, কাল তুমি আসছ আর উনি আজ নিষেধ করছে! কেন তুমি থাকতে দিবেনা তো তখন রাজী হয়েছিলে কেন? তখন নিষেধ করলেই পারতো! আচ্ছা যাক এখন বল কি খবর?
রাশেদ সাহেব সব কিছু খুলে বললেন। নাসিরের সাথে হঠাত ব্রিকলেনে দেখা। নাসিরের ওই মহিলাকে দেখার ইচ্ছার প্রেক্ষিতে এখন ওখানে গিয়েছিলাম, কাল লডন ছেড়ে চলে যাচ্ছি একথাও বলে এসেছি।
নাসিরকে বলল
তুমি ফিরোজের সাথে আলাপ কর আমি ফুফু আম্মা আর ভাবির সাথে দেখা করে আসছি।
ভাবি জিগ্যেস করল
ভাই, আপনি এবারে লন্ডনে থাকা নিয়ে এই ঘটনা কেন ঘটালেন? আমিতো আগে কিছু জানতে পারিনি, আজ দুপুরে আপনার বন্ধু বলছে রাশেদ এসেছে কিনা বা কোন ফোন করেছিল কিনা? আপনিও কাল ফোন করেছিলেন কিছু বলেননি, আজ এসেছেনতো সেই সকালে একটা ফোনও করেননি। ওতো চিন্তায় অস্থির।

আচ্ছা ভাবি, এবারের জন্য মাফ করা যায়না?
আচ্ছা যাক যা হবার হয়েছে এখন কি একবারে ভাত খাবেন নাকি এখন চা দিব?
না ভাবি, আজ ভাত খাব না আপনি চা দেন।
কি বলেন সঙ্গে নতুন মেহমান নিয়ে এসেছেন খেয়ে যাবেন না?
না ভাবি, ফাহমিদা মানে ওর বৌ অনেক রান্না করে রেখে গেছে, আমি কাল চলে যাচ্ছি আর ও যাবে পরশু কাজেই এখানে খেয়ে গেলে অনেক খাবার ফেলে দিতে হবে।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনি ওখানে গিয়ে বসুন আমি চা নিয়ে আসছি।
আমি কি একটু হেল্প করবো? নতুন ওয়েটারি শিখেছিতো টেস্ট করে দেখতে পারেন।
না ওয়েটার সাহেব আপনার হেল্প লাগবেনা আমার পুরোন ওয়েটার আছে আপনি ওখানে বসেন।
চা নাস্তার পালা শেষে বিদায়ের পালা। ভাবি সেই আগের খাতা এনে সামনে ধরলেন,
ভাই লেটেস্ট ফোন নম্বর আর ঠিকানা।
খাতাটা নিয়ে পকেট থেকে জব সেন্টার থেকে দেয়া ঠিকানা বের করে লিখে ভাবির হাতে দিয়ে
আচ্ছা তাহলে এবার আসি।
ফোন করবেন।
আচ্ছা।

তাহলে আবার অপেক্ষার পালা। রাশেদ সাহেব কখন সাউথ ওয়েলসের ব্রিজেন্ড পৌঁছায় এবং তার জন্য কি অপেক্ষা করছে!

(****) আসুন, আমাদের আগামীর জন্য আমরা আমাদের প্রিয় সুন্দর ও আকর্ষনীয় শহর তিলোত্তমা ঢাকা মহানগরী রেখে যাই। এই ঢাকা শহর আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। মুখের ভাষা দিয়েছে, স্বাধীনতা দিয়েছে এবং এমন অনেক দিয়েছে। আমরা আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য এই ঢাকা শহরের একটু যত্ন নেই! সবার মাঝে প্রাণের এই দাবী, এই আকুতি ছড়িয়ে দিন।

No comments:

Post a Comment

Thank you very much for your comments.